রেকর্ড গড়া জয়ে  ইতালির শুরু?!

রেকর্ড গড়া জয়ে ইতালির শুরু?!

 


রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে ব্যর্থ হওয়া ইতালি ফিরল বড় মঞ্চে। এবং সেটা রাজসিকভাবে। পাঁচ বছরের মধ্যে বড় কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে নেমে করল শুভ সূচনা, গড়ল রেকর্ড।

পুরো ম্যাচে এক মুহূর্তের জন্যও রেবর্তো মানচিনির দলকে ভাবাতে পারেনি তুরস্ক। রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোয় শুক্রবার রাতে ইউরোর উদ্বোধনী ম্যাচে শুরু থেকে শেষ মিনিট আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ৩-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। ইউরোর ইতিহাসে উদ্বোধনী ম্যাচে এটি সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়।

তিনটি গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান চিরো ইম্মোবিলে ও লরেন্সো ইনসিনিয়ে।

রাশিয়া বিশ্বকাপে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার ছয় মাস পর কোচ রবের্তো মানচিনিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ইতালি। যার হাত ধরে আজ অজেয় হয়ে উঠেছে দলটি। ২০১৮ সালে নেশন্স লিগে পর্তুগালের বিপক্ষে হারের পর আর ওই তেতো স্বাদ পায়নি তারা। অপরাজেয় পথচলা বেড়ে দাঁড়ালো ২৮ ম্যাচে।

শেষ আট ম্যাচ যারা জিতে এসেছে জাল অক্ষত রেখে-তাদের বিপক্ষে রক্ষণ সামলানোটাই যে আসল কাজ তা ভালো করেই জানে তুরস্ক। কার্যকর কৌশলে প্রথমার্ধে তাতে শতভাগ সফল তারা।

একচেটিয়া আক্রমণ করে যাওয়া ইতালি বিরতির আগেই গোলের উদ্দেশে নেয় ১৪টি শট, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ যে তারা তৈরি করতে পেরেছে, তা নয়। তবে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ ধরে রাখার কাজটা দারুণভাবে করেছে তারা।

উল্লেখযোগ্য প্রথম সুযোগটা আসে ষোড়শ মিনিটে। তবে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট কোনাকুনি শট নেন ইনসিনিয়ে। ছয় মিনিট পর নাপোলির এই ফরোয়ার্ডের কর্নারে জর্জো কিয়েল্লিনির হেড লাফিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক।

বিরতির খানিক আগে তুরস্কের ডি-বক্সে তাদের মিডফিল্ডার ওকাই ওয়োকুসলুর হাতে বল লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে ইতালি। শরীর থেকে তার হাত ছিল বেশ দূরে, যদিও ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়ে বল ঠেকাননি তিনি। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে খেলা চালিয়ে যান রেফারি।

দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ভাঙে তুরস্কের প্রতিরোধ। তাদের ভুলেই গোল পায় এগিয়ে যায় ইতালি। শুরু থেকে দারুণ খেলতে থাকা দমিনিকো বেরার্দি ডি-বক্সে ঢুকে ডান দিক দিয়ে সতীর্থের উদ্দেশে ক্রস বাড়ান। তবে গোলমুখে ডিফেন্ডার দেমিরালের শরীরে লেগে বল যায় গোললাইন পেরিয়ে।

পরের চার মিনিটে আরও দুবার ভীতি ছড়ায় তারা। লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার শটে বল প্রতিপক্ষের এক পায়ে লেগে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। খানিক পর মানুয়েল লোকাতেল্লির শট ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক উরজান চাকির।

চাপ ধরে রেখে ৬৬তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইতালি। বেরার্দির বাড়ানো বল ধরে স্পিনাজ্জোলার নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ফেরালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি গোলরক্ষক। বিনা বাধায় আলতো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন লাৎসিও ফরোয়ার্ড ইম্মোবিলে।

আর ৭৯তম মিনিটে দারুণ এক গোলে ব্যবধান বাড়ান ইনসিনিয়ে। ডান দিক থেকে গড়ে ওঠা আক্রমণে সতীর্থের পাস ডি-বক্সে বাঁ দিকে পেয়ে কোনাকুনি জোরালো শটে বল জালে পাঠান তিনি।

এই প্রথম ইউরোর মূল পর্বে তিন গোলের দেখা পেল ইতালি। আর ১৯৮৯-৯০ এর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টানা ৯ ম্যাচে জাল অক্ষত রাখল আঁটসাঁট রক্ষণের জন্য পরিচিত দলটি; তিন দশক আগের ওই সময়ে টানা ১০ ম্যাচ জাল অক্ষত ছিল তাদের।

বিপরীতে, বড় টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তুরস্কের ব্যর্থতার গল্প আরও দীর্ঘ হলো। বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলে এই নিয়ে সাত আসরের প্রতিটিতেই হেরে শুরু করল দলটি। অন্তত এমন তিনটি টুর্নামেন্ট খেলেছে, কিন্তু প্রথম ম্যাচে জিততে না পারা একমাত্র দল তারাই।

Ads on article

Advertise in articles 1

advertising articles 2

Advertise under the article