এক দিনে সর্বোচ্চ ৫৪৪ জন শনাক্ত খুলনা বিভাগে ?!

এক দিনে সর্বোচ্চ ৫৪৪ জন শনাক্ত খুলনা বিভাগে ?!


 


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে খুলনা বিভাগে এক দিনে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে ৫৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ৬ জন। আজ মঙ্গলবার খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল প্রায় গত বছরের মার্চ মাসে। এরপর থেকে কখনোই বিভাগের ১০ জেলা মিলিয়ে এক দিনে ৫০০ রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা প্রথম করোনা শনাক্তের পর থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ। প্রথমবারের মতো বিভাগের তিন জেলায় একই দিনে ১০০–এর ওপর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।


খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের ১০ জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৫৫ জন। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ৬৮০ জন।

খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। গত বছরের ২৩ জুলাই এ সংখ্যা ১০ হাজার এবং ১২ আগস্ট ১৫ হাজার ছাড়ায়। চলতি বছর ১ জানুয়ারি ২৫ হাজার, ৩০ মে ৩৪ হাজার, ৩ জুন ৩৫ হাজার ও ৭ জুন শনাক্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়ায়।

মোট সুস্থ হয়েছেন ৩২ হাজার ২৬২ জন
গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন। বিভাগে করোনায় আক্রান্তের পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হলেন ৩২ হাজার ২৬২ জন। সুস্থতার হার ৮৭ শতাংশ।

মৃত ও শনাক্তের হার বাড়ছে

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা–সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে,  ঈদুল ফিতরের পর থেকে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি মাসের প্রথম ৮ দিনে (১-৮ জুন) ২ হাজার ৬৬৪ জনের, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৩৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর এই সময়ে মারা গেছেন ৩৫ জন। এর আগের ৮ দিনে (২৪-৩১ মে) ১ হাজার ২২২ জনের, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। ওই সাত দিনে মারা যান ৩১ জন। দেখা যাচ্ছে, গত আট দিনে আগের আট দিনের চেয়ে শনাক্ত দ্বিগুণ বেড়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা—এ তিন জেলার প্রতিটিতে শতাধিক ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা জেলায় রয়েছেন ১৫১ জন (নগরে ১১২ জন)। এ ছাড়া বাগেরহাটে ৫৩ জন, যশোরে ১২৫, সাতক্ষীরায় ১০৩, নড়াইলে ৬, মেহেরপুরে ১৪, চুয়াডাঙ্গায় ২৮, ঝিনাইদহে ১৪ ও কুষ্টিয়ায় ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মাগুরায় কেউ শনাক্ত হননি।

খুলনা শহরে শনাক্তের হার বেশি
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের জেলাভিত্তিক হিসাবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৮৯৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন খুলনা জেলায়। এর মধ্যে খুলনা শহরেই শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮৫২ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৬০ জন, চুয়াডাঙ্গায় ২ হাজার ৯৮, যশোরে ৭ হাজার ৫৫৬, ঝিনাইদহে ২ হাজার ৯৯৩, কুষ্টিয়ায় ৫ হাজার ২৫৪, মাগুরায় ১ হাজার ২৭৯, মেহেরপুরে ১ হাজার ৮৮, নড়াইলে ১ হাজার ৯২৭ ও সাতক্ষীরায় ২ হাজার ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ হাজার ১৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩১৮ জন।


গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় ৪ জন এবং যশোর ও কুষ্টিয়ায় ১ জন করে করোনা রোগী মারা গেছেন। বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে খুলনা জেলায় রয়েছেন ১৮৮ জন, কুষ্টিয়ায় ১২০, যশোরে ৮৩, চুয়াডাঙ্গায় ৬৪, ঝিনাইদহে ৫৭, সাতক্ষীরায় ৪৮, বাগেরহাটে ৪৭, নড়াইলে ২৭ এবং মাগুরায় ও মেহেরপুরে ২৩  জন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. মনজুরুল মুরশিদ প্রথম আলোকে বলেন, এ মুহূর্তে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এক সপ্তাহে বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় যে লকডাউন দেওয়া হয়েছে, এক সপ্তাহ পর তা পর্যালোচনা করে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত বা পুরোপুরি লকডাউনে যাওয়া লাগতে পারে। তিনি আরও বলেন, আসলে স্বাস্থ্যবিধি কেউ মেনে চলছেন না। এ কারণে করোনার সংক্রমণ বেড়ে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

Ads on article

Advertise in articles 1

advertising articles 2

Advertise under the article